সাস্কাচোয়ান পিএনপি

 

29 m 
সাস্কাচোয়ান পিএনপিতে ফেঞ্চ ভাষার নূতন ভুমিকা !!!
==============================
 সাস্কাচোয়ান পিএনপিসাধারনত প্রতি বছর শীতের শুরুতে তার ইমিগ্রেশন প্রোগ্রামে পরিবর্তন এনে থাকে, এই বছর হয়ত একটু দেরিতেই আনল।
কানাডা ইমিগ্রেশন প্রত্যাশী বাঙ্গালীর আশা ভরসার কেন্দ্রস্থল সাস্কাচোয়ান পিএনপিতে পয়েন্ট বণ্টনে একটি গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন কার্যকর করেছে ২৪ নবেম্বর ২০২০ থেকে।
এখন থেকে সাস্কাচোয়ান পিএনপির পয়েন্ট বণ্টন ১০০ এর পরিবর্তে ১১০ উন্নীত করা হল এবং নুন্যতম পাস মার্ক আগের মত ৬০ রাখা হল।
নতুন ১১০ পয়েন্টের বণ্টনে সেকেন্ড ল্যাঙ্গুয়েজের জন্য বাড়তি ১০ পয়েন্ট দেয়া হয়েছে, আমরা ধরে নিতে পারি এই পয়েন্টটি বাংলাদেশী আবেদনকারীদের ক্ষেত্রে ফ্রেঞ্চ ভাষা দক্ষতার পয়েন্ট হিসাবে বিবেচিত হবে।
নতুন নিয়ম অনুসারে কানাডার দ্বিতীয় ভাষার(বাঙ্গালীর জন্য ফ্রেঞ্চ ভাষা) জন্য বাড়তি ১০ পয়েন্ট সাস্কাচোয়ানের পয়েন্ট বণ্টনে দেয়া হয়েছে , এতে করে একজন আবেদনকারী ২ থেকে ১০ পয়েন্ট বাড়তি পয়েন্ট পেতে পারেন।
সেকেন্ড ল্যাঙ্গুয়েজ(আমাদের জন্য ফ্রেঞ্চ) CLB 4 এর জন্য সর্বনিম্ন ২ এবং CLB8 এর জন্য ১০ পয়েন্ট দেয়া হয়েছে।
এখন প্রশ্ন আসবে আমরা অনেকেই তো IELTS এ ভাল করতে পারছি না আর এই নূতন পরিবর্তন কি আমাদের ইমিগ্রেশনের সপ্নের কফিনে শেষ পেরেকটি ঠুকে দিল?
মোটেও না।
আমার মতে এই পরিবর্তন আমাদের জন্য আমাদের জন্য নিঃসন্দেহে সুখবর এবং সাস্কাচোয়ানে আত্মীয়ছাড়া আবেদনকারীদের জন্য পজেটিভ নিউজ বয়ে আনবে।
কারনটা বলছি।
সাস্কাচোয়ান প্রভিন্সে আত্মীয়/ পড়াশুনা/চাকুরি ছাড়া আবেদনকারীরা এত দিন ৭০ পয়েন্টের মধ্যে সর্বাধিক পয়েন্ট পাবার জন্য চেষ্টা চালিয়ে যেতে হত, এখন একজন আবেদনকারী ৮০ পয়েন্টের মধ্যে সর্বাধিক পয়েন্ট তোলার সুযোগ পাবেন। এত দিন কারও বয়স ৩৫ পার হয়ে গেলেই তার ৬৮ পয়েন্টের উপরে উঠার কোন সুযোগ ছিল না ওই দিন শেষ।
আগের চিত্র
-----------
বাঙ্গালীর বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে সেশন জটের কারনে এবং ইমিগ্রেশন ভাবনা দেরিতে আসার কারনে বেশির ভাগ আবেদনকারীর ৩৫ বছরের বয়সের নিচে ১০ বছরের চাকুরির অভিজ্ঞতা থাকেন না, আর ১০ বছরের অভিজ্ঞতা হতে হতে আমাদের বেশির ভাগেরই বয়স ৩৫ এর গণ্ডি পেরিয়ে যায়। ফলে ৩৫ এর বেশি বয়সী আবেদনকারীরই ৬৮ এর উপর উঠার এবং ৪৬ থেকে ৫০ এর মধ্যে বয়সী আবেদনকারীর ৬৬ পয়েন্টের উপরে উঠার সুযোগ ছিল না।
সাস্কাচোয়ান পিএনপিতে যেখানে প্রায় ২ লাখের কাছাকাছি ইওএই জমা পড়ে আছে সেখানে কাট অফ স্কোর ৬৮ এর নিচে কিংবা ৬৮ তে দুর্লভ ড্রতে নামলেও NOC কোডের সীমাবদ্ধতার কারনে সাস্কাচোয়ান পিএনপিতে সফল হবার সুযোগ সীমিত ছিল।
আমরা সাস্কাচোয়ান পিএনপির ড্র সম্পন্ন হবার পরই প্রতিনিয়ত এই বিষয়ে সবার হতাশা ও আক্ষেপ দেখতে পেতাম, সুযোগটা আসলেই সীমিত ছিল। কিন্তু দেরিতে হলেও পরিবর্তন আসল।
নতুন চিত্র
----------
২৪ নভেম্বর ২০২০ থেকে নতুন চালু হওয়া নতুন পয়েন্ট বণ্টন অনুসারে আত্মীয়ছাড়া একজন আবেদনকারী ৮০ পয়েন্টের মধ্যে সর্বাধিক পয়েন্ট তোলার সুযোগ পাবেন। নতুন এই বাড়তি ১০ পয়েন্ট আবেদনকারীর দ্বিতীয় ভাষাগত দক্ষতার উপর দেয়া হবে। আমাদের ক্ষেত্রে বলা যায় ফ্রেঞ্চ এর TEF এক্সামের উপর ভিত্তি করে দেয়া হবে।
এই নূতন নিয়মের ফলে যা ঘটার সুযোগ রয়েছে
-------------------------------------------
১) ফ্রেঞ্চ ভাষার পয়েন্ট দেখে আতংকিত হবার কিছু নাই, আফ্রিকার কিছু দেশর গুটি কয়েক আবেদনকারী ছাড়া ইউরোপ থেকে খুববেশি ফ্রেঞ্চভাষী আবেদনকারী কানাডা ইমিগ্রেশনে আবেদন করেন না, তাছাড়া যারা কানাডাতে আবেদন করতে ইচ্ছুক তারা অন্টারিও কিংবা নোভা স্কসিয়ার মত প্রভিন্স ফেলে সাস্কাচোয়ান আসার সম্ভবনা অনেক কম।
২) দ্বিতীয় ল্যাংগুয়েজে পয়েন্ট দেবার কারনে সাস্কাচোয়ান কাট অফ স্কোর রাতারাতি আকাশ ছোঁয়া হয়ে যাবে এমনটা হবার সুযোগ কম, লাস্ট এক্সপ্রেস এন্ট্রি ড্রই তার প্রমান যেখানে এক ড্রতে কাট অফ স্কোর ৬ কমেছে।
৩) এখন থেকে ৩৫ বছরের বেশি বয়সী আবেদনকারীরা শুধু মাত্র ভাগ্যের দোষ দিয়ে ৬৮ পয়েন্টে বসে থাকতে হবে না। তারা দ্বিতীয় ভাষা হিসাবে ফ্রেঞ্চ শিখে স্কোর অর্জন করে তারা ৭০ এর উপরে যেতে পারছেন। এমনকি ৪৬ থেকে ৫০ বছর বয়সী আবেদনকারীদেরও ফ্রেঞ্চ ভাষায় দক্ষতার উপর ভিত্তি করে সফল হবার সুযোগ আসবে।
৪) যারা শুধু ব্যাচেলর ডিগ্রি করেছেন তারা সাস্কাচোয়ান পিএনপিতে সফল হবার সুযোগ আত্মীয়ছাড়া ছিল না এবং যারা ইসিএ তে মাস্টার্স পান নাই তারাও সফল হবার সুযোগ ছিল না, তারা কিন্তু এখন ফ্রেঞ্চ ভাষার পয়েন্ট তুলে ৭০ এর উপর পয়েন্ট নিয়ে যাবার সুযোগ পাবেন।
৫) উপরের বিষয়গুলো কিন্তু শুধু আমাদের জন্য নয়, বিশ্বের প্রতিটি দেশের আবেদনকারীদের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য, আমাদের প্রতিবেশী দেশ ইন্ডিয়া ও পাকিস্থানসহ সকল দেশের আবেদনকারীরাই ফ্রেঞ্চ শিখে স্কোর তোলার জন্য চেষ্টা করবে, আমরা এখন আগের চেয়ে অনেক বেশি প্রতিযোগিতামূলক, আমরা তাদের এখন আর কোন বিষয়ে কোন ছাড় দেই না।
সাম্প্রতিক সময়ে আমরা যেমন করে পার-ক্যাপিটা জিডিপিতে তাদের পিছনে ফেলেছি, বড় ও প্রতাপশালীদেশ দেখে ও ভয় পাইনি, তেমনি চেষ্টা চালিয়ে গেলে আমরা এই ইমিগ্রেশনের প্রতিযোগিতায় ও তাদের পিছনে ফেলতে সমর্থ হব। আর যাই হউক বাঙ্গালীর মেধা কম এই বিষয়টি আমি কোন দিনই বিশ্বাস করি না।
৬) আমাদের দ্বিতীয় ভাষা অর্থাৎ ফ্রেঞ্চ শিখতে হবে, আমরা মানুষ হিসাবে সুশৃঙ্খল এবং নিয়েমের প্রতি সদা স্রধাশীল, দ্বিতীয় ভাষা শিখতে হবে বলে ইমিগ্রেশনের স্বপ্ন ছেড়ে দিতে হবে এমনটা দেয়া যাবে না, যুদ্ধে পলায়ন পরায়তার কোন স্থান নাই, তাই এই ইমিগ্রশন যুদ্ধে আমাদের জয়ী হতে হবে, শুরুটা হউক নূতন একটি ভাষা শিখে।
পরিশেষে বলব,
কানাডা ইমিগ্রেশনের ক্ষেত্রে ফ্রেঞ্চ শিক্ষা এখন সময়ের দাবী যা উপেক্ষা করা যায় না, তাই চলুন আমরা সবয়াই আফ্রিকার তৃতীয় এবং ইউরোপের তৃতীয় জনপ্রিয়তম ভাষা ফ্রেঞ্চ শিখতে শুরু করি। কে জানে সে দিন আর বেশি দূরে নয় যখন ঢাকার রাস্তার পাশে ফ্রেঞ্চ ভাষা শিক্ষার বিশাল বিশাল বিলবোর্ড দেখতে পাব। হয়ত কয়েক বছরের মধ্যেই আমার ঢাকাসহ বিভিন্ন প্রান্তরে আলিয়া ফ্রাসেস এর নানা সেন্টারের মাধ্যমে ফ্রেঞ্চ পরীক্ষার আয়োজন দেখতে পাবে।
(উপরের লিখাটুকু আমার ব্যাক্তিগত মতামত, যে কেউ দ্বিমত পোষণ করতে পারেন এবং ভুল হয়ে থাকলে ক্ষমা চাইছি

Comments

Popular posts from this blog

What are Supply and Demand Zones and How to Trade with Them

এগুলো খান, ভালো ঘুমান

Sea Fish in ctg